
ই-কমার্স কেনাকাটার প্রথম ধাপ শুরু হয় কল টু অ্যাকশন (CTA) বাটনে কাষ্টমারের ক্লিক করার মাধ্যমে। যদি বেশি পরিমাণে ই-কমার্স কনভার্শন চান তবে কল টু অ্যাকশন বাটনটিকে আরো বেশি চমকপ্রদক, ফোকাসড এবং ভ্যালুয়েবল করে তুলতে হবে।
কাস্টমার কেন আপনার ইকমার্স ওয়েবসাইট এর কম্প্যাকশন বাটনে ক্লিক করবে? এই প্রশ্নটিই যদি নিজেকে করে থাকেন, এবং তার উত্তর আপনার কাছে স্পষ্ট নয় তবে বুঝতে হবে আপনার কয়েকটি একশন বাটন কাস্টমারদের প্রভাবিত করতে যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
আপনাকে এমন একটি কল টু একশন বাটন ডিজাইন করার দিকে মনোযোগী হতে হবে যেটি দৃশ্যমান স্পষ্ট তথ্য প্রদান করে এবং কাস্টমারদের কেনাকাটায় ভ্যালু অ্যাড করে।
তাহলে কিভাবে ই-কমার্স বিজনেস এর জন্য একটি পাওয়ারফুল কয়টি একশন বাটন ডিজাইন করবেন?
মানুষকে বলুন এই মুহূর্তে যে প্রোডাক্টটি এভেলেবেল রয়েছে কিন্তু খুব বেশি সময়ের জন্য সেটি থাকবে না। এটি মানুষের মধ্যে সেন্স অফ আর্জেন্সি তৈরি করে এবং মানুষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিবর্তে সরাসরি অ্যাকশনে যায়।
অনলাইন মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যখনই আপনি সেন্স অফ আর্জেন্সি তৈরি করার চেষ্টা করবেন সেই সাথে আপনাকে এমন কিছু কল টু অ্যাকশন জুড়ে দিতে হবে যেটি কাস্টমারদের সামনে ভিজুয়াল থাকে।
তবে কল টু অ্যাকশন যোগ করলেই হবে না অ্যাড করতে হবে উপযোগিতা বা ভ্যালু।
উপরের ছবিতে খেয়াল করে দেখুন কল টু একশনের ঠিক ওপরে লেখা আছে, only 1 item in stock.
আর এর মাধ্যম দিয়েই একটি প্রোডাক্ট কেনার জন্য কাস্টমারদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া কে প্রভাবিত করা যায়।
এবারে উপরের চিত্রটি খেয়াল করুন দেখবেন কয়েকটা একশনের ঠিক নিচে ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট অফার করা হয়েছে যার মাধ্যম দিয়ে কল টু অ্যাকশন এ ক্লিক করার জন্য কাস্টমারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
এবারে অপরিচিত খেয়াল করে দেখুন সরাসরি প্রডাক্ট ডেসক্রিপশন লাইনেই উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে প্রোডাক্ট লিমিটেড এডিশন যেটি কাস্টমারদের কল টু অ্যাকশন এ ক্লিক করার জন্য প্রভাবিত করে ।
আর এভাবেই একটি CTA তে ক্লিক করার জন্য ভ্যালু অ্যাড করতে হয়।
মার্কেটিয়ারদের দুটি বিষয় মনে রাখতে হবে সেটি হচ্ছে
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে হিউম্যান ব্রেনের টেন্ডেন্সি থাকে যতটা সম্ভব জটিলতা এড়িয়ে সহজ সিদ্ধান্তে আসা।
এবং এই বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে আপনি CTA ডিজাইন করতে পারেন।
উপরের চিত্রটি খেয়াল করলে দেখবেন সেখানে কল টু অ্যাকশনের ঠিক ওপরে প্রোডাক্টের মূল্যের সাথে রিভিউ জুড়ে দেয়া হয়েছে।
আমরা সবাই জানি e-commerce কেনাকাটার জন্য কাস্টমার রিভিউ একটি শক্তিশালী প্রভাবক।
একই সাথে প্রোডাক্টের ছবির সাথে একটা এক্সট্রা ট্যাগ লাগানো হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে প্রডাক্টিভ বেস্ট সেলার।
একজন কাস্টোমার যখন এই দুইটি বিষয় খেয়াল করবে তখন দ্রুততম সময়ে কল টু অ্যাকশন এ ক্লিক করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
মানব মস্তিষ্ক কে প্রভাবিত করার আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে অথরিটি প্রদর্শন করা
চিত্রে লক্ষ্য করলে দেখবেন প্রোডাক্টের CTA- র ঠিক নিচে সেই প্রোডাক্টের সার্টিফিকেশন গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
আর এই বিষয়গুলো প্রোডাক্টের অথেন্টিসিটি সম্পর্কে কাস্টমারদের মনে পজেটিভ ধারণার তৈরি করে, এবং কাস্টমার এটি দ্বারা দারুন রকম ভাবে প্রভাবিত হয়।
কাস্টমারদের সিদ্ধান্ত নেবার প্রক্রিয়াকে দ্রুত করার আরও একটি পদ্ধতি হচ্ছে পারচেস সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা’ গুলো কে সহজ করে দেওয়া।
একজন কাস্টোমার নতুন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা করার সময় অথবা একটি এক্সপেন্সিভ প্রোডাক্ট কেনার সময় কয়েকটি বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে।
এগুলো মূলত পারচেস ডিসিশন নেবার জন্য অন্যতম প্রভাবক। যেমন প্রোডাক্টের শিপিং চার্জ কত, এক্সচেঞ্জ রিফান্ড অথবা রিটার্ন পলিসি আছে কিনা, একই সাথে প্রোডাক্টটি ওভার প্রাইস করা হয়েছে কিনা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি কিছুটা সংশয় থাকেন।
ই-কমার্স ওয়েবসাইট এ CTA পাওয়ারফুল করার জন্য আপনাকে এই সংশয় গুলোকে দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে।
কিভাবে সেটি করবেন নিচের চিত্র খেয়াল করুন,
Shoes.com কাস্টমারদের মেজর তিনটি সংশয় দূর করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা ফ্রী শিপিং ফ্রী এক্সচেঞ্জ এবং প্রোডাক্ট এর প্রাইস এর যথার্থতা নিশ্চিত করতে আশ্বাস প্রদান করেছেন।
এটি একজন কাস্টমার কে কল টু অ্যাকশন বাটনে হিট করার জন্য নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত করে।
মানব মস্তিষ্ক প্রথম দেখা সংখ্যা দ্বারা দারুণরকম প্রভাবিত। আপনি তাকে পরবর্তীতে যতগুলো নাম্বার দেখান না কেন সে প্রতিবার প্রথম দেখার নাম্বারের সাথে সেটিকে কম্পেয়ার করতে থাকে।
উপরের চিত্রে খেয়াল করুন একটি প্রোডাক্ট এর প্রাইস প্রাথমিকভাবে 200 ডলার নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং সেটিকে পরবর্তী সময়ে ডিসকাউন্ট দিয়ে 140 ডলারে নিয়ে আসা হয়েছে।
এখানে প্রডাক্টিভ বিক্রি করার জন্য নির্ধারিত মূল্য 140 ডলার কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে মূল্যমান তাকে কিছুটা বাড়িয়ে 200 ডলার করা হয়েছে পরবর্তীতে যেটি কমিয়ে 140 টাকা নিয়ে আসা হয়।
কিন্তু কাস্টমার এর প্রোডাক্ট এর মূল্যমান বিচার করবে সেই 200 ডলার অনুসারেই।
এখানে ছাড়কৃত মূল্য তার জন্য অর্জন।
কল টু অ্যাকশন জুড়ে দিলেই হয় না নিশ্চিত করতে হয় এর আইডল প্লেসমেন্ট। এখানে প্লেসমেন্ট বলতে বুঝানো হয়েছে ঠিক কোথায় কল টু অ্যাকশন টি জুড়ে দিতে হবে।
উপরের চিত্রটি খেয়াল করলে দেখবেন CTA বাটনটি অনেক নিচে জুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রডাক্ট দেস্ক্রিপশন কি অনেক বড় এবং ডানদিকে প্রোডাক্টের ছবি দেখানো হয়েছে।
কিন্তু আমরা যখন অন্যান্য ওয়েবসাইটের দিকে খেয়াল করি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় প্রোডাক্ট এর ডিস্ক্রিপশন ডান দিকে রাখা হয় এবং বাম দিকে ছবি জুড়ে দেয়া হয়।
আপনি চাইলে বামদিকের পরিবর্তে ডানদিকে ছবি দেখাতে পারেন তবে কম্প্যাকশন বাতেন কি জানো প্রথম পেইজে সমস্ত ডিসক্রিপশন এর সাথে একসাথে প্রদর্শিত হতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
যদি কয়েকটি একশন বাটন প্রডাক্ট ইনফর্মেশন এর সাথে প্রদর্শিত না হয় তবে কাস্টমার একশন নেবার জন্য কল টু অ্যাকশন খুঁজে পেতে বাড়তি পদক্ষেপ নেবেন কিনা সেটি নির্ভর করে তার ডিসিশনে লেভেল এর উপরে।
কিন্তু আমরা যদি আরো বেশি কনভার্শন পেতে চাই তবে কল টু একশন বাটন গুলো তাদের সামনে রাখতে হবে।
কল টু অ্যাকশন বাটনগুলো কাস্টমারকে কি অ্যাকশন নিতে বলছে বা কেন অ্যাকশন নিতে ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে কি মেসেজ দিচ্ছে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উপরের চিত্রটি খেয়াল করলে দেখবেন ছেকআউৎ পেজ এ যাবার পরে কাস্টমারদের বলা হচ্ছে কন্টিনিউ করতে।
কিন্তু তিনি কি কন্টিনিউ করবেন সেটি সেই বাগানের টেক্সট দ্বারা পরিষ্কার নয়।
এবারে নিচের চিত্রটি খেয়াল করুন,
এখানে লক্ষ্য করলে দেখবেন কাস্টমারদের পেমেন্ট সংক্রান্ত তথ্য রিভিউ করার জন্য কন্টিনিউ করতে বলা হচ্ছে এবং এটি খুব স্পষ্ট তথ্য। একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা সম্পন্ন করার জন্য এই ধরনের পোস্ট ও তথ্য কাস্টমারদের পারচেস এক্সপেরিয়েন্সকে সাবলীল করে তোলে।
ই-কমার্স ওয়েবসাইটের প্রডাক্ট পেজ এ সমস্ত ইনফরমেশন এর মধ্যে আপনার কন্ঠ একশন বাটনটি হাইলাইটেড হতে হবে। কাস্টমার জন্য খুব সহজেই পরবর্তী একশন নেবার জন্য দরকারী বাটনটি খুঁজে পায়।
এক্ষেত্রে ফ্রন্ট সাইজ বড় করে বাটন এর কালার ভিন্ন রেখে এ ধরনের বিভিন্ন উপায়ে আপনি কল টু অ্যাকশন বাটনটিকে ব্যতিক্রমী করে তুলতে পারেন যা কাস্টমারের কাছে খুব সহজে দৃশ্যমান হবে যেমনটি নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন।
যদি এমন হয় যে একটি পেজে একের অধিক কল টু একশন বাটন রয়েছে তবে প্রয়োজনীয় বাটনটিকে হাইলাইট করে অপরদিকে কিছুটা ডি ফোকাস করতে পারেন।
আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটে কাস্টমারের বিহেভিয়ার এর উপর নির্ভর করে পপ-আপ কল টু অ্যাকশন জুড়ে দিতে পারেন।
এক্ষেত্রে কাস্টমার যখন একটি নির্দিষ্ট সময় আপনার ওয়েবসাইটের কোনো একটি পেজে অবস্থান করবে তখন অটোমেটিকভাবে পপ-আপ একশন বাটন টি তে আসলে চলে আসবে।
ধরুন কোনো একজন কাস্টোমার আপনার প্রোডাক্ট পেইজে অবস্থান করছে।
এখন আপনি যদি সেই পেজের জন্য একটি পপ-আপ কল টু অ্যাকশন ডিজাইন করে রাখেন, যেটি সেই পেজে কেউ যখন এক মিনিট অবস্থান করবে তখনই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার সামনে চলে আসবে যেমনটি নিচের চিত্রে দেখা যাচ্ছে।
ই-কমার্স বিজনেস মার্কেটিং এর প্রতিটি খুটিনাটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেকেই কল টু অ্যাকশন বাটনটিকে তেমন একটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করি না, কিন্তু আপনাকে ভাবতে হবে এই বাটনটির মাধ্যমে একজন কাস্টোমার পরবর্তী ধাপের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
তাই CTA ডিজাইনের জন্য আরো বেশি যত্নশীল হতে হবে। আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর কল টু অ্যাকশন বাটনটি কেমন এবং এটি কিভাবে আপনার প্রোডাক্ট পেজে ভ্যালু অ্যাড করে? আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
ফেসবুক অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে জানেন কি? ফেসবুক পেজে পোস্ট করছেন কিন্তু সেটি বেশি মানুষকে রিচ করছে না অথবা অডিয়েন্স সেটির সাথে এঙ্গেজ হচ্ছে না, এমন সমস্যার মধ্য দিয়ে বর্তমানে প্রায় সবাই যাচ্ছেন। কিভাবে আমরা এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে...
আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর শপিংকার্টে কেন প্রোডাক্ট অ্যাড (যোগ) করছে না? আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাফিক কিন্তু তারা কেউ কেনাকাটা করছে না।এমন পরিস্থিতি যদি আপনার সাথে ঘটে তবে আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর ঠিক ভাবে বুঝে উঠছে না ওয়েবসাইটে ল্যান্ড করার পরে...
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা Search Engine Marketing (SEM) হলো ব্যবসা বৃদ্ধি এবং নতুন গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় গুলোর মধ্যে একটি। দীর্ঘমেয়াদে ট্র্যাফিক আকর্ষণ করার জন্য অর্গানিক মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কখনও কখনও, SERPs বা Search Engine Result...
Comments (0)